Header Ads Widget

Responsive Advertisement

কিভাবে শুরু করবেন ফ্রিল্যান্সিং একদম ব্যাসিক থেকে প্রোফেশনাল পর্ব ০৩


itfiroz
itfiroz

আসসালামু আলাইকুম সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আজকের টিউন। আজকের টিউনে যা নিয়ে আলোচনা করব তার সারমর্ম দেখেনিন।
ফ্রিল্যান্সিং কি সত্যিই খুব সহজ?
প্রকৃত ফ্রিল্যান্সারের করণীয়?
কোনটা শিখব?
কোথায়, কিভাবে?

তাহলে শুরু করে দেয়া যাকঃ

ফ্রীলেন্সিং/আউটসোর্সিং কি এবং কিভাবে শুরু করবেন?
ফ্রীলেন্সিং/আউটসোর্সিং এ আসার আগেই যে বিষয় প্রথমেই করা উচিত তা হলো আউটসোর্সিং কি সেটা ভালোভাবে জানা। মূলতগতানুগতিক চাকরির বাইরে নিজের ইচ্ছেমত কাজ করার নামই আউটসোর্সিং বা মুক্ত পেশা। আর এই পেশায় যিনি জড়িতথাকেন তাকে ফ্রিল্যান্সার বলা হয়। একজন ফ্রিল্যান্সার কোনো প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবি হিসেবে নয়, কাজের ধরণ বা প্রকল্পেরমেয়াদ অনুযায়ী স্বল্পকালীন কাজ করে থাকেন।
এক্ষেত্রে তাকে কিছু শর্ত মেনে চলতে হয়। তিনি চুক্তিভিত্তিক পারিশ্রমিক পেয়ে থাকেন, যা সময় অথবা নিদ্দিষ্ট পরিমানের ভিত্তিতেনির্ধারণ করা থাকে। মূলত বিভিন্ন অনলাইন মার্কেট প্লেস বা ওয়েবের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপি আউটসোর্সিং কাজ দেওয়া নেওয়া হয়।ইন্টারনেটে বিভিন্ন আউটসোর্সিং মার্কেটপ্লেস (ওয়েবসাইট, যেমন: ওডেস্ক) -এর মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আউটসোর্সিংকর্মীদের মাধ্যমে তাদের প্রতিষ্ঠানের কাজগুলো করিয়ে নিয়ে থাকেন। মূলত স্বল্প সময়ের কাজগুলোই আউটসোর্স বেশি করা হয়েথাকে। অনেক প্রতিষ্ঠান স্থায়ী কর্মী নিয়োগ দেয়ার চেয়ে স্বল্প সময়ের আউটসোর্সিং কর্মীদের দিয়ে কাজ করাতেই বেশিস্বাচ্ছন্দবোধ করে। এক্ষেত্রে একজন কর্মীকে কেবল তাঁর কাজের জন্যই অর্থ পরিশোধ করতে হয়, কাজ না করলে কোন ধরণেরঅর্থ পরিশোধ করতে হয় না। প্রতিষ্ঠান চাইলেই যেকোন ফ্রিল্যান্স কর্মীকে তাঁর প্রকল্প শেষে/মাঝামাঝি সময়ে বাদ দিয়ে দিতেপারে, চাইলে যেকোন সময় নতুন কর্মীও নিয়োগ দিতে পারে। এটিকে স্থায়ী কর্মীর চেয়ে অনেক নমনীয় মনে করে বিভিন্নপ্রতিষ্ঠান, দিন দিন তাই আউটসোর্সিংয়ের পরিমাণ বাড়ছে বিশ্বব্যাপী। ইন্টারনেটের কল্যানে এখন উন্নত বিশ্বের বিভিন্নকোম্পানীর কাজ উন্নয়নশীল দেশগুলোর কর্মীরাও ঘরে বসেই করার সুযোগ পাচ্ছেন। তবে সরাসরি কাজের বিষয়ও রয়েছে।মোটকথা আউটসোর্সিং হলো ঘরে বসে বাইরের তথা দেশ বিদেশের কাজ করা ও অর্থ উপার্জন করা। যেসব কর্মীরা এধরণেরকাজ করছেন, তারাই মূলত ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং কর্মী।

আউটসোর্সিং এ বাংলাদেশের অবস্থানঃ
ফ্রিল্যন্সিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান বেশ সন্তোষজনক পর্যায়ে। ওডেস্কের এক জরিপে প্রকাশ, সাইটটিতে বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারেরহিসাব অনুযায়ী আমরা বিশ্বব্যাপী তৃতীয় অবস্থানে রয়েছি। বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের সম্পর্কে ম্যাট কুপার জানিয়েছেন,বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা খুব ভালো কাজ করছেন, দ্রুত তাঁদের উন্নতি হচ্ছে। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ থেকে কাজ পাওয়ার হারউল্লেখ করার মতো কিছু ছিল না। মাত্র তিন বছরে ওডেস্কে বাংলাদেশ শীর্ষ তালিকার তৃতীয় স্থানে উঠে গেছে। এছাড়া ওডেস্কে মোটকাজের ১২ শতাংশ বাংলাদেশিরাই সম্পন্ন করছে। এটা খুব বড় ধরনের উন্নতি।
ম্যাট কুপার জানান, বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের অনেকেই পড়ালেখার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করছেন। কেউবা চাকরির পাশাপাশিআবার কেউবা লোভনীয় চাকরি ছেড়ে দিয়েও কাজ করছেন। ওডেক্সে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে ১০ হাজার ঘন্টার উপরে কাজকরেছেন এমন কয়েকজনকে পাওয়া যাবে। প্রত্যেকে আয় করছেন হাজার হাজার ডলার। এমনকি ৩০ হাজার ডলারের উপরে আয়েররেকর্ডও রয়েছে। যা বাংলাদেশের জন্য গর্বের। 

আরেক ফ্রিল্যান্সিং সাইট ফ্রিল্যান্সার.কমে ২৫ হাজারের বেশি বাংলাদেশি নিবন্ধিতফ্রিল্যান্সার রয়েছে বলে জানা গেছে। ফ্রিল্যান্সিং শুরু করছেন তাদের জন্য উপযোগী হওয়ায় এই সাইটটিতে ক্রমেই বাংলাদেশিফ্রিল্যন্সারদের পরিমাণ বাড়ছে। অপর জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং সাইট রেন্ট-এ-কোডারে রয়েছে ৫ হাজারের অধিক ফ্রিল্যান্সার। এদেরমধ্যে অনেকেরই ১০০টির বেশি প্রজেক্ট সম্পন্ন করার অভিজ্ঞতা আছে শতাধিক ফ্রিল্যান্সারের। বাংলাদেশ থেকে ৫০০ এর বেশিপ্রজেক্ট সম্পন্নকারীও রয়েছেন এই মার্কেটপ্লেসে।
বাংলাদেশের ওভারাল অবস্থান নিয়ে বলতে গেলে, আমরা সাধারণ ডাটা এন্ট্রির কাজ থেকে শুরু করে উচু মানের কারিগরি কাজেওআমরা বেশ ভাল অবস্থানে রয়েছি। প্রতিটা জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং মার্কেটপ্লেসেই আমাদের অবস্থান তৃতীয় থেকে পঞ্চমেরমধ্যে।কেন ফ্রিল্যান্সিং করবেন?

ফ্রিল্যান্সিং কেন করবেন এটা ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। অনেকে প্রথাগত নয়টা-পাঁচটা চাকরিতে আগ্রহী নয়, তার জন্য হয়তকাজের সময়ের নমনীয়তার জন্যই ফ্রিল্যান্সিং সবচেয়ে আকর্ষনীয়। আবার অনেকে অফিসে চাকরির ক্ষেত্রে যত টাকা আয় করেনফ্রিল্যান্সিংয়ে আয় করেন তারচেয়ে পাঁচ থেকে ছয়গুন বেশি। এমন অনেকেই রয়েছেন যারা ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে আয় করেন ৩থেকে ৪ লাখ টাকা, অথচ কর্পোরেট চাকরি করলে হয়ত তাদের বেতন হত ২০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫০/৬০ হাজার টাকা। এক্ষেত্রেহয়ত উনি বেশি টাকার জন্যই ফ্রিল্যান্সিং করেন এটিই তাঁর কাছে ফ্রিল্যান্সিংয়ের সবচেয়ে আকর্ষনীয় দিক।

তবে সাধারণত ফ্রিলান্সিংয়ে যেসব সুবিধার কারণে সবাই আগ্রহী হয়ে থাকেন সেগুলো হলো, নিজেই নিজের বস হওয়ার সুযোগ! যখনখুশি কাজ করবেন, যখন ইচ্ছে বন্ধ করবেন। রয়েছে কাজের স্বাধীনতা, কি কাজ করবেন, কার সঙ্গে কাজ করবেন এটি একান্তইআপনার ব্যক্তিগত ইচ্ছা। যেহেতু আপনি কাজের উপর নির্ভর করেই টাকা পাবেন তাই এতে প্রোডাকটিভিটি বাড়ে। আপনি যেহেতুঅনেক মানুষের সঙ্গে কাজ করবেন তাই বাড়বে আপনার কমিউনিটির পরিধিওযেহেতু অফিসের একই কাজ আপনাকে প্রতিদিনকরতে হচ্ছেনা, প্রতিদিন নতুন নতুন কাজের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন নিশ্চিত তাই এটি আপনার দক্ষতা বাড়াবে।

কি করা যাবেঃ

ইন্টারনেটের মাধ্যমে যেসব কাজ করা সম্ভব তার সবই করতে পারেন একজন ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং কর্মী। অনেকে মনে করে থাকেনফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং কেবল ওয়েবসাইট ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্টের মতো কাজগুলোতেই সীমাবদ্ধ। ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদেরএকজন একজন শিক্ষার্থী চাইলে কোন প্রতিষ্ঠানের হিসাব নিকাশ করে কিংবা অর্থনৈতিক অবস্থার বিশ্লেষণ করেও বিপুল পরিমাণটাকা আয় করতে পারেন। অনলাইন মার্কেট প্লেসে বিভিন্ন ধরনের কাজ থাকে। একজন ফ্রিল্যান্সার তার দক্ষতা অনুযায়ি সংশ্লিষ্ঠকাজ করতে পারেন। এ ধরণের কাজের মধ্যে রয়েছে- ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব ডিজাইন, সফটওয়্যার/অ্যাপ্লিকেশনডেভেলপমেন্ট, ব্লগ রাইটিং/আর্টিকেল রাইটিং, ডাটা এন্ট্রি, গ্রাফিক্স ডিজাইন, কাস্টমার সাপোর্ট, সেলস/অনলাইন মার্কেটিং, অনলাইনসার্ভে, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি। যারা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ও ডিজাইন করতে চান তারা ওয়ার্ডপ্রেস, সিএসএস, পিএইচপি, এইচ.টি.এম.এল, জুমলাসহ নিজের পছন্দ অনুযায়ী বিভাগ বেছে নিতে পারেন। সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের ক্ষেত্রে ডেস্কটপঅ্যাপ্লিকেশন, মোবাইল অ্যাপস নির্বাচন করতে পারেন। যারা ইংরেজিতে ভালো দক্ষ ও যেকোনো লেখা লিখতে পারেন তারা ব্লগ/আর্টিকেল রাইটিং করতে পারেন। এক্ষেত্রে কোনো ব্লগের জন্য পোস্ট, রিভিউ রাইটিং করা যাবে। ডাটা এন্ট্রি ক্ষেত্রে রয়েছে পিডিফথেকে এক্সেল শিট সম্পাদন, ক্যাপচা এন্ট্রি ইত্যাদি। গ্রাফিক্স ডিজাইনের ক্ষেত্রে অ্যাডোব ইলাস্ট্রেটর, ফটোশপ ইত্যাদি যেকোনো বিষয়নির্বাচন করতে পারেন। আর কাস্টমার ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ইমেইল রেসপন্স, কল রেসপন্স বা কল সেন্টার সার্ভিস দেয়াযাবে। জনপ্রিয় আরেকটি বিষয় সেলস মার্কেটিং ক্যাটাগরিতে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন [এসইও], মার্কেট রিসার্চ,

  সোশ্যাল মার্কেটিইত্যাদি করা যাবে।যা প্রয়োজনঃ

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফলতার মুলমন্ত্র হলো মেধা বা দক্ষতা। থাকতে হবে ধৈর্য্য। বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের ক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা হলোইংরেজি না জানা বা কম জানা। গার্টনারের জরিপে দেখা গেছে, দেশের তরুণেরা আউটসোর্সিংয়ে পিছিয়ে থাকার পেছনে ইংরেজিদুর্বলতা দায়ী। আউটসোর্সিংয়ের ক্ষেত্রে ইংরেজি যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সেটি অনেকে বুঝতে চান না। যেহেতু বিদেশী বায়ারেরসাথে নিয়মিত যোগাযোগ করতে হয় সে জন্য ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। নতুবা কোনভাবেই আপনি আপনার বায়ারেররিকোয়ারমেন্ট যেমন বুঝতে পারবেন না তেমনি কোন সমস্যাও তাকে বুঝিয়ে বলতে পারবেন না। ইংরেজিতে দূর্বলরা উপরের কথাপড়ে হয়ত ভড়কে যেতে পারেন, তবে তাদের জন্য বলতে পারি যে আপনাকে কিন্তু ইংরেজিতে পন্ডিত হতে হবে এমনটি নয়। ভাববিনিময় এবং ব্যবসায়িক কাজগুলোর জন্য সাধারণত যে ইংরেজি ব্যবহৃত হয় সেটি জানলেই চলবে। যারা ইংরেজিতে দূর্বল তাদেরএটি দূর করতে খুব বেশি যে সময় লাগবে এমনটি নয়, ২ থেকে ৩ মাস একটু চেষ্টা করলেই এ ধরণের ইংরেজি রপ্ত করা সম্ভব। এছাড়াপ্রয়োজনীয়ভাবে সংশ্লিষ্ঠ কাজের পাশাপাশি ইন্টারনেট সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে। কাজ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই ডেডলাইনেরদিকে নজর রাখা জরুরী। পারলে ডেডলাইনের আগে ভাগেই কাজটি শেষ করে বায়ারের কাছে জমা দেওয়া ভালো। এছাড়া ভালোরেটিং পাওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করার মানসিকতা রাখতে হবে। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় পরিমাণ কাজ করার মানসিকতা তৈরিকরতে হবে। আর হ্যাঁ, দ্রুত কাজের জন্য অবশ্যই অপেক্ষাকৃত ভালোমানের কম্পিউটার ও দ্রুতগতির ইন্টারনেট থাকতে হবে। আরকাজের ধরণ অনুযায়ি স্ক্যানার, ডিজিটাল ক্যামেরা বা অন্য কোনো যন্ত্রেরও প্রয়োজন পড়তে পারে।

দক্ষতা অনুযায়ি কাজ বেছে নেওয়াঃ

ফ্রিল্যান্সিংয়ের সফলতার পিছনে প্রথমে যে কাজটি কাজ করে সেটি হলো নিজের দক্ষতা বা পছন্দের বিষয় অনুসারে কাজ খুঁজে বেরকরা। একজন ফ্রিল্যান্সারের প্রথম কাজ হলো তিনি কি করবেন সেটি আগে নির্ধারণ করা। বিষয় নির্ধারণ করে সেক্ষেত্রে নিজেকে যেবিষয়ে আন্তর্জাতিকমানের হিসেবে গড়ে তুলেছেন বা তুলতে পারার মতো মনোবল আছে সেটি প্রাধাণ্য দেয়া উচিত। কারণ তাকেআন্তর্জাতিক মার্কেটে অভিজ্ঞদের সাথে বিড করে কাজ পেতে হবে। অভিজ্ঞ নন, সে বিষয়ে নিয়ে কাজ করতে যাওয়া মানেইবোকামির পরিচয়।

প্রয়োজনে প্রশিক্ষণ নেয়াঃ

সফটওয়্যার বা ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট কিংবা কনটেন্ট ডেভেলপমেন্ট যাই হোক না কেনো সে বিষয়ে যথেষ্ঠ জ্ঞান থাকতে হবে।বিষয়টি সম্পর্কে আরো ভালোভাবে জানতে প্রশিক্ষণ নেয়া যেতে পারে। সম্প্রতি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস ফ্রিল্যান্সার.কম আয়োজিত সার্চইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ও কন্টেন্ট রাইটিং প্রতিযোগিতায় বিজয়ী বাংলাদেশি সফটওয়্যার ডেভলপমেন্ট প্রতিষ্ঠান ডেভসটিম লিমিটেডফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। ৩ মাস মেয়াদী এসব প্রশিক্ষনে অংশগ্রহণের পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে বিভিন্নধারণা পেতে রাজধানীর নিউ এলিফ্যান্ট রোডের মাল্টিপ্লান সেন্টারের ১২ তলায় অবস্থিত ডেভসটিম অফিস ঘুরে আসতে পারেন।এছাড়া বেসিসসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান নিয়মিত ফ্রিল্যান্সার প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিডি জবস, ড্যাফোডিল ইনস্টিটিউট অব আইটি।মার্কেটপ্লেস 

নির্বাচনঃ

ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে মার্কেটপ্লেস বলতে বোঝায় যেখান থেকে ফ্রিল্যান্স কাজ পাওয়া যায় বা দেয়া যায়। যারা এসব সাইটে কাজ দেয়তাদের বলা হয় বায়ার বা ক্লায়েন্ট। আর যারা এই কাজগুলো সম্পন্ন করে তাদের বলা হয় কোডার বা প্রোভাইডার। কোডার একটিকাজের জন্য বা প্রজেক্টের জন্য বিড বা আবেদন করে। কত দিনের মধ্যে প্রজেক্ট জমা দিতে হবে, কত টাকায় তা সম্পন্ন করতে হবেসব বিষয় পরিস্কার উল্লেখ থাকে। কোডাররা আবেদন করার পর ক্লায়েন্ট যাকে ইচ্ছা তাকে কাজটির জন্য নির্বাচন করতে পারে।ক্লায়েন্ট সাধারণত কোডারের পূর্ব অভিজ্ঞতা, বিড করার সময় কোডারের মন্তব্য ইত্যাদি বিষয় গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে।কোডার নির্বাচিত হবার পর ক্লায়েন্ট কাজের টাকা সাইটগুলোতে জমা করে দেয়। কোডার কাজ শেষ করার সাথে সাথে টাকাপাওয়ার নিশ্চয়তা পেয়ে যান। যে সাইটির মাধ্যমে কাজটি পাওয়া গেছে সে সাইটটি নির্দিষ্ট কমিশন রেখে বাকি টাকা কোডারেরঅ্যাকাউন্টে জমা করে দেয়। আর এসব কাজে মাধ্যম হিসেবে কাজ করে মার্কেটপ্লেস। ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে অনেক সাইট রয়েছে। এধরণের জনপ্রিয় কিছু সাইট হলো- ওডেস্ক.কম, ফ্রিল্যান্সার.কম, স্কিপ্টল্যান্সার.কম, রেন্ট-এ-কোডার.কম, ইল্যান্স.কম, জুমলাল্যান্সার.কম, গেট-এ-ফ্রিল্যান্সার.কম। এসব সাইটে বিনামুল্যে নিবন্ধণ করে শুরু করা যেতে পারে ফ্রিল্যান্সিং কাজ। নিবন্ধনেরআগে অবশ্যই সাইটটির বিভিন্ন নিয়মাবলি, কাজ পাবার যোগ্যতা, পেমেন্ট মেথড বা বিভিন্ন চার্জ সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিতেহবে।

আবেদনের প্রস্তুতিঃ

মার্কেট প্লেসে নিবন্ধনের পরপরই ভালো একটা কাভার লেটার তৈরি করা উচিত, যা ক্লায়েন্টের কাছে কাজের আবেদনের সময়লাগবে। সাথে আগে সম্পন্ন করা উল্লেখযোগ্য কাজের লিস্ট বা একটি ভালো পোর্টফলিও তৈরি করা। বায়ার কাজ দেয়ার ক্ষেত্রে মূলতএই পোর্টফলিও বা কাজের অভিজ্ঞতার বিষয়টি বিবেচনা করেন। রেজিস্ট্রেশন করার সময় ব্যক্তিগত তথ্য, ঠিকানা, ইমেইল ইত্যাদিসঠিকভাবে দিতে হবে। রেজিষ্ট্রেশনের একটি ধাপে আপনার একটি প্রোফাইল/রিজ্যুম তৈরি করতে হবে যেখানে আপনি কোন কোনক্ষেত্রে পারদর্শী তা উল্লেখ করবেন। এখানে আপনি আপনার পূর্ব কাজের অভিজ্ঞতা, ওয়েবসাইট লিংক ইত্যাদি দিতে পারেন। মনেরাখতে হবে, আপনার প্রোফাইলটি যত প্রফেশনালি এবং বেশি তথ্য দিয়ে সাজাতে পারবেন আপনার কাজ পাবার সম্ভাবনাও তত বেশিহবে। তবে কোনো মিথ্যার আশ্রয় না নিয়ে যে বিষয়ে দক্ষতা আছে সেটি ভালোভাবে তুলে ধরা উচিত। কোনো কাজ গ্রহণের আগেসেটির সময়সীমা, বাজেট ও সংশ্লিষ্ঠ অন্যান্য বিষয়গুলো ভালোভাবে জেনে নিতে হবে। আর ক্লায়েন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যইসতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। পারলে সেই ক্লায়েন্টের পূর্বের কোনো রিভিউ দেখে নেয়া। কারণ অনেক সময় ক্লায়েন্ট প্রতারক হলেকাজটি করিয়ে প্রতারণা করতে পারেন।কাজ বিড করার আগেঃ
সফলভাবে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হবার পর, এখন আপনি বিড করা শুরু করে দিতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে প্রতি মূহুর্তেনতুন কাজ আসছে। আপনার পারদর্শীতা আনুযায়ী প্রতিটা কাজ দেখতে থাকুন। প্রথম কয়েক দিন বিড করার কোন প্রয়োজন নেই।এই কয়েকদিন ওয়েবসাইটি ভাল করে দেখে নিন। ওয়েবসাইটের বিভিন্ন নিয়ম-কানুন এবং সাহায্যকারী আর্টিকেল পড়ে ফেলতেপারেন। একটি কথা মনে রাখবেন, প্রথমদিকে কাজ পাওয়া কিন্তু সহজ নয়। তাই আপনাকে ধর্য্যসহকারে বিড করে যেতে হবে। প্রথমকাজ পেতে হয়ত ১০ থেকে ২০ দিন পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। কয়েকটি কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করার পর আপনাকে আর পেছনফিরে তাকাতে হবে না। তখন ক্লায়েন্টরাই আপনাকে খোঁজে বের করবে।

ফ্রিল্যান্সিং কি সত্যিই খুব সহজ?

বর্তমানে সবচেয়ে স্মার্ট এবং জনপ্রিয় পেশা হলো ফ্রিল্যান্সিং। যার মাধ্যমে আমাদের অনেক স্বল্পশিক্ষিত তরুণও ঘুরে দাড়িয়েছে। বাংলাদেশ থেকে প্রচুর তরুণ বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর সাথে নিযুক্ত হচ্ছেন। নতুন যারা এ পেশায় আসতে চান, কিংবা যারা নতুন, তারা অনেকেই ভাবেন, কম্পিউটারের মাউস ঘোরাতে পারলে কিংবা টাইপিং জানলেই আপনিও করতে পারবেন। তাদের প্রতি আমার প্রশ্ন: বাংলা রিডিং পড়া জানলে আর লিখতে জানলেই কি আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাবেন?? আর রিডিং পড়া আর লেখা জানাটা তো আমরা ক্লাস-টু কিংবা থ্রিতেই শিখে যাই। কিন্তু ভাসির্টি চান্সের জন্য কি করতে হয় সেটা কেবল এইচ.এস.সি দেওয়ার পর একটা শিক্ষার্থীই জানে, যে চান্স পেয়েছে। ফ্রিল্যান্সিংটাও সে রকম। সত্যিকার ফ্রিল্যান্সিং (ডোল্যান্সার, মোল্যান্সার/ক্লিক ফ্লিক নয়) করতে এখন ফ্রিল্যান্সারই জানেন, কত শত রাত তাকে জাগতে হয়েছে। দৈনিক কত ঘন্টা কম্পিউটারের সামনে বসে থাকতে হয়। এই তো, আমাদের জাহেদুল ইসলাম ভাই, যিনি ঢাকা বিভাগ থেকে ফ্রিল্যান্সিং এ বেসিস এওয়ার্ড পেয়েছেন, সেই প্রতিবন্ধি জাহেদ ভাই, আজ আরো কঠিন রোগে আক্রান্ত। কম্পিউটারের সামনে বসে থাকতে থাকতে তার মেরুদন্ড বাকা হয়ে গেছে
এখনসোজা হয় না, নড়াচড়া করলে প্রচুর ব্যথা হয়।

প্রকৃত ফ্রিল্যান্সারের করণীয়ঃ

মুল কথা হলো, সত্যিকারের ফ্রিল্যান্সার হতে চাইলে আপনার দরকার যেকোন একটি কাজের আগা-গোড়া খেয়ে ফেলা অর্থাৎ কাজটি এমনভাবে শিখতে হবে যাতে করে আপনি সারা বিশ্বের সকল ফ্রিল্যান্সারদের সাথে প্রতিযোগীতায় টিকে থাকতে পারেন। আর তা না হলে দু-একটা কাজ পেলেও যেকোন সময় ছিটকে পড়বেন। ভার্সিটি পরীক্ষায় যেমন যেকোন বিষয়ের খুটিনাটিসহ ভালোভাবে বুঝতে হয় ফ্রিল্যান্সিংটা তাই। কারণ ভার্সিটির মতই এখানে প্রতিযোগীতা দিয়ে কাজ অর্জন করে নিতে হয়। ভার্সিটির মতই এখানে প্রতিটি কাজের দক্ষতা/মান যাচাই করে আপনার ক্লায়েন্ট আপনাকে মার্কস দেয়।সেটাও জিপি-এ সিস্টেমের মতই-৫, যাকে বলে রেটিং। এই রেটিং ৪ হলেও অনেক সময় কাজ পাওয়াটা মুশকিল হয়ে যায়। তাই মূল কথা হলো কাজ শিখতে হবে। আর পরিশ্রমী হতে হবে। আর কাজ জানলে আপনি মার্কেটপ্লেসে কাজ না করলেও দেশীয় বিভিন্ন আইটি ফার্মে স্মার্ট সেলারীতে কাজ করতে পারবেন। তাছাড়া অনেক খুচরা কাজও পার্সোনালী পাবেন।

কোনটা শিখব?

কাজ শেখার কথা বললেই প্রথমেই আসে আপনি কোন কাজটা শিখবেন?? এবং এটা নিয়ে অনেকেই আমাকে মেইল/এফবি এবং টিউনে টিউমেন্ট করেন। কাজের ক্ষেত্রে আমি প্রথমেই রিটিউমেন্ট করবো, আপনি যদি আগে কোন কাজ জেনে থাকেন সেই কাজটাই নতুন করে শিখুন। আর নতুনরা আপনাদের যেটার প্রতি আগ্রহ অনুভব করবেন, যেমন আপনার ছোটকাল থেকে আঁকাআঁকির অভ্যাস সেক্ষেত্রে আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন শুরু করুন। আর যারা ম্যাথে ভালো করেছেন, তারা ওয়েব ডিজাইন শুরু করতে পারেন। তাছাড়া যাদের এই দুটিতেই দুর্বল তারা এসইও করতে পারেন। আর যাই শিখবেন এডভান্স শিখুন। কারণ আমি আগেই বলেছি, ফ্রিল্যান্সিং এ বেসিক লেভেলের কোন কাজ দিয়ে আপনি কিছু করতে পারবেন না। তাই যে কাজটা আগে শিখেছেন সেটাই নতুন করে আবার শুরু করুন এবং বার বার প্রাকটিস করুন। আপনার কাজের সাথে রিলেটেড বিভিন্ন আর্টিকেল পড়ুন। যারা প্রফেশনালী ঐ কাজগুলো করেন, তাদের কাজের স্যাম্পল দেখুন। আপনি সে রকম আরেকটি তৈরী করার চেষ্টা করুন। এভাবে ভালোভাবে কাজ শেখার পর অন্তত দুমাস সময় নিন, সব ধরনের জটিল জটিল কাজগুলো প্রাকটিস করে আয়ত্ত করার।

কোথায়, কিভাবে?

তারপর যখন নিজের প্রতি আত্নবিশ্বাস পাবেন তখন আপনি ফ্রিল্যান্সিংমার্কেটেপ্লেসগুলোতে একাউন্ট করুন। মনে রাখবেন, ক্লায়েন্ট আপনাকে দেখছেনা, আপনার বংশ পরিচয়/ফ্যামিলি স্ট্যাটাস অথবা দেশে আপনার প্রভাব/ক্ষমতা কতটুকু সেটা দেখছে না, দেখবে প্রথমে আপনার প্রোফাইল, আমরা যেমন কোন শপিংমলে গেলে তথা কোন শো-রুমে গেলে প্রথমত উক্ত শো-রুমের সাজসজ্জা, আয়তন এবংপণ্যগুলোর উপস্থাপন এবং সার্ভিসারদের আচরণ দেখে প্রথমত পছন্দ করি, তারপর তার পণ্যগুলো ভালো হলে বার বার ঔই শো-রুমে যাই, তথা সবাইকে রিটিউমেন্ট করি।মাকের্টপ্লেসেও সে রকম, প্রথমে আপনার প্রোফাইলের সাজানো গোছানো, পোর্টফোলিও এবং অন্যান্য তথ্য, টেস্ট ইত্যাদি প্রথমত পছন্দ করেন। তারপর আপনার কভারলেটার এবং সর্বশেষ আপনাকে হায়ার করার পর কাজের কোয়ালিটি দেখা হয়।তার উপর নির্ভর করে আপনাকে ফিডব্যাক দেয়। বেশিরভাগ ক্লায়েন্ট আপনার কাজ ভালো লাগলে পরবর্তী কাজগুলোর জন্য আপনাকেই রিকুয়েস্ট করবে।